ঢাকা , শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ ও ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে বিভিন্ন অনিয়ম

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২১
  • 4

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ ও আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির আর্থিক হিসাবে বিভিন্ন অনিয়ম খুজেঁ পেয়েছে নিরীক্ষক। যেখানে শ্রম আইনের ব্যত্যয়, অতিরঞ্জিত মুনাফা, হিসাব মান লঙ্ঘনের মতো অনিয়ম রয়েছে।

আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং : নিরীক্ষক জানিয়েছেন এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ২০২০ সালের ৩০ জনু মজুদ পণ্য হিসেবে ২২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার সম্পদ দেখায়। যা তারা তৃতীয় পক্ষ দিয়ে গণনা করেনি। এছাড়া করোনার কারনে নিরীক্ষক নিজেও পরীক্ষামূলক গণনা করতে পারেননি। যে কারনে ওই পরিমাণ মজুদ পণ্য ছিল কিনা, নিরীক্ষক তা নিশ্চিত না।

এদিকে স্থায়ী সম্পদের উপর অবচয় কম চার্জ করে মুনাফা বেশি বা অতিরঞ্জিত করে দেখায় বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। তারা প্রপার্টি প্লান্ট অ্যান্ড ইক্যুপমেন্ট নগদ ভিত্তিতে দেখিয়ে এই অনিয়ম করেছে।

কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড (ডব্লিউপিপিএফ) হিসেবে ৭১ লাখ টাকা দেখায়। কিন্তু শ্রম আইন ২০০৬ এর ২৩৪ অনুযায়ি তারা পার্টিসিপেশন ফান্ড ও ওয়েলফেয়ার ফান্ড গঠন করেনি।

এই কোম্পানিটির ২০২০-২১ অর্থবছরের আর্থিক হিসাবেও আপত্তি জানিয়েছেন নিরীক্ষক। তিনি জানিয়েছেন, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালের ৩০ জনু মজুদ পণ্য হিসেবে ২৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকার সম্পদ দেখিয়েছে। যা তারা তৃতীয় পক্ষ দিয়ে গণনা করেনি। এছাড়া করোনার কারনে নিরীক্ষক নিজেও পরীক্ষামূলক গণনা করতে পারেননি। যে কারনে ওই পরিমাণ মজুদ পণ্য ছিল কিনা, নিরীক্ষক তা নিশ্চিত না।

আগের বছরের ন্যায় ২০২০-২১ অর্থবছরেও অবচয় কম চার্জ করে মুনাফা বেশি করে দেখিয়েছে আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং। এছাড়া ডব্লিউপিপিএফ হিসেবে ৮১ লাখ টাকা দেখালেও শ্রম আইন ২০০৬ এর ২৩৪ অনুযায়ি তারা পার্টিসিপেশন ফান্ড ও ওয়েলফেয়ার ফান্ড গঠন করেনি।

আরও পড়ুন…….
নিজেদের ব্যবসা নিম্নমুখী হলেও সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের দায়িত্ব নিতে চায় আলিফ গ্রুপ

আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ : এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ মজুদ পণ্য কারসাজিতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে মুনাফা বেশি করে দেখায় বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক হিসাব মান (আইএএস)-২ অনুযায়ি Lower Of cost এবং net realizable পদ্ধতিতে মজুদ পণ্য দেখায়নি। তারা যদি net realizable পদ্ধতিতে মজুদ পণ্য হিসাব করত, তাহলে ৩৩ লাখ টাকার কমে আসত। এতে করে একই পরিমাণ বিক্রিত পণ্যের ব্যয় বেড়ে যেত। ফলে নিট ইনকাম, কর ও শেয়ারহোল্ডারস ইক্যুইটি কমে আসত।

এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ডব্লিউপিপিএফ ফান্ডের জন্য সঠিকভাবে শ্রম আইন পালন করে না। তারা এই ফান্ডের জন্য পৃথক ব্যাংক হিসাব গঠন করেনি এবং ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে যথাসময়ে শ্রমিকদের মধ্যে ফান্ড হস্তান্তর করে না।

নিরীক্ষক জানিয়েছেন, কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ডেফার্ড ট্যাক্স গণনায় স্থায়ী সম্পদের পূণ:মূল্যায়নজনিত অংশ অন্তর্ভূক্ত করেছে। যা হিসাব মানের লঙ্ঘন। এতে করে করে ডেফার্ড ট্যাক্স দায় বেশি দেখানো হয়েছে। যে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আইএফআরএস-৯ অনুযায়ি পর্যাপ্ত ডিসক্লোজারস দেয়নি।

এ বিষয়ে জানতে প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মোহাম্মদ হানিফকে ফোন দিলেও তিনি কোন মন্তব্য করবেন না বলে জানান।

বিজনেস আওয়ার/০৫ ডিসেম্বর, ২০২১/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ ও ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে বিভিন্ন অনিয়ম

পোস্ট হয়েছে : ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২১

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ ও আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির আর্থিক হিসাবে বিভিন্ন অনিয়ম খুজেঁ পেয়েছে নিরীক্ষক। যেখানে শ্রম আইনের ব্যত্যয়, অতিরঞ্জিত মুনাফা, হিসাব মান লঙ্ঘনের মতো অনিয়ম রয়েছে।

আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং : নিরীক্ষক জানিয়েছেন এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ২০২০ সালের ৩০ জনু মজুদ পণ্য হিসেবে ২২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার সম্পদ দেখায়। যা তারা তৃতীয় পক্ষ দিয়ে গণনা করেনি। এছাড়া করোনার কারনে নিরীক্ষক নিজেও পরীক্ষামূলক গণনা করতে পারেননি। যে কারনে ওই পরিমাণ মজুদ পণ্য ছিল কিনা, নিরীক্ষক তা নিশ্চিত না।

এদিকে স্থায়ী সম্পদের উপর অবচয় কম চার্জ করে মুনাফা বেশি বা অতিরঞ্জিত করে দেখায় বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। তারা প্রপার্টি প্লান্ট অ্যান্ড ইক্যুপমেন্ট নগদ ভিত্তিতে দেখিয়ে এই অনিয়ম করেছে।

কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড (ডব্লিউপিপিএফ) হিসেবে ৭১ লাখ টাকা দেখায়। কিন্তু শ্রম আইন ২০০৬ এর ২৩৪ অনুযায়ি তারা পার্টিসিপেশন ফান্ড ও ওয়েলফেয়ার ফান্ড গঠন করেনি।

এই কোম্পানিটির ২০২০-২১ অর্থবছরের আর্থিক হিসাবেও আপত্তি জানিয়েছেন নিরীক্ষক। তিনি জানিয়েছেন, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালের ৩০ জনু মজুদ পণ্য হিসেবে ২৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকার সম্পদ দেখিয়েছে। যা তারা তৃতীয় পক্ষ দিয়ে গণনা করেনি। এছাড়া করোনার কারনে নিরীক্ষক নিজেও পরীক্ষামূলক গণনা করতে পারেননি। যে কারনে ওই পরিমাণ মজুদ পণ্য ছিল কিনা, নিরীক্ষক তা নিশ্চিত না।

আগের বছরের ন্যায় ২০২০-২১ অর্থবছরেও অবচয় কম চার্জ করে মুনাফা বেশি করে দেখিয়েছে আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং। এছাড়া ডব্লিউপিপিএফ হিসেবে ৮১ লাখ টাকা দেখালেও শ্রম আইন ২০০৬ এর ২৩৪ অনুযায়ি তারা পার্টিসিপেশন ফান্ড ও ওয়েলফেয়ার ফান্ড গঠন করেনি।

আরও পড়ুন…….
নিজেদের ব্যবসা নিম্নমুখী হলেও সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের দায়িত্ব নিতে চায় আলিফ গ্রুপ

আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ : এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ মজুদ পণ্য কারসাজিতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে মুনাফা বেশি করে দেখায় বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক হিসাব মান (আইএএস)-২ অনুযায়ি Lower Of cost এবং net realizable পদ্ধতিতে মজুদ পণ্য দেখায়নি। তারা যদি net realizable পদ্ধতিতে মজুদ পণ্য হিসাব করত, তাহলে ৩৩ লাখ টাকার কমে আসত। এতে করে একই পরিমাণ বিক্রিত পণ্যের ব্যয় বেড়ে যেত। ফলে নিট ইনকাম, কর ও শেয়ারহোল্ডারস ইক্যুইটি কমে আসত।

এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ডব্লিউপিপিএফ ফান্ডের জন্য সঠিকভাবে শ্রম আইন পালন করে না। তারা এই ফান্ডের জন্য পৃথক ব্যাংক হিসাব গঠন করেনি এবং ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে যথাসময়ে শ্রমিকদের মধ্যে ফান্ড হস্তান্তর করে না।

নিরীক্ষক জানিয়েছেন, কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ডেফার্ড ট্যাক্স গণনায় স্থায়ী সম্পদের পূণ:মূল্যায়নজনিত অংশ অন্তর্ভূক্ত করেছে। যা হিসাব মানের লঙ্ঘন। এতে করে করে ডেফার্ড ট্যাক্স দায় বেশি দেখানো হয়েছে। যে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আইএফআরএস-৯ অনুযায়ি পর্যাপ্ত ডিসক্লোজারস দেয়নি।

এ বিষয়ে জানতে প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মোহাম্মদ হানিফকে ফোন দিলেও তিনি কোন মন্তব্য করবেন না বলে জানান।

বিজনেস আওয়ার/০৫ ডিসেম্বর, ২০২১/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: